February 23, 2025, 9:46 pm
দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলায় তিনজনকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। নিহত তিনজনই একটি চরমপন্থি দলের সঙ্গে জড়িত বলে জানা গেছে।
শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ৮টার দিকে শৈলকুপা উপজেলার ত্রিবেণী ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর শ্মশানঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহতদের মধ্যে দুজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলার আহাদনগর গ্রামের রাহাজ উদ্দীনের ছেলে আবু হানিফ ওরফে হানিফ আলী (৫৬) ও তার শ্যালক শ্রীরামপুর গ্রামের উম্মাদ আলীর ছেলে লিটন (৩৫)। এর মধ্যে হানিফ পূর্ববাংলা কমিউনিস্ট পার্টির (জনযুদ্ধ) আঞ্চলিক নেতা। তিনি মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ছিলেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, রাত সাড়ে ৮টার দিকে তিন থেকে চারটি গুলির শব্দ শুনতে পান তারা। ঘটনায় ভীত এলাকাবাসী কেউ ঘর থেকে বের হননি। কয়েক ঘণ্টা পর রাত সাড়ে ১১টার দিকে এলাকাবাসী একত্রিত হয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে তিনটি মরদেহ ও দুটি মোটরসাইকেল পড়ে থাকতে দেখেন। এরপর তারা পুলিশে খবর দেন।
শৈলকুপা উপজেলার রামচন্দ্রপুর পুলিশ ক্যাম্পের উপ-পরিদর্শক মতিয়ার রহমান জানান, স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। তিনজনকেই খুব কাছ থেকে মাথায় গুলি করে হত্যা করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
একাধিক এলাকাবাসী নাম প্রকাশ না করে জানান, দীর্ঘদিন ধরে কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ ও চুয়াডাঙ্গায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে পূর্ববাংলা কমিউনিস্ট পার্টির (জনযুদ্ধ) ও জাসদ গণবাহিনী নামে দুটি চরমপন্থি দলের মধ্যে বিরোধ চলে আসছে।
তারা জানান, ঘটনাস্থল ছিল নির্জন। সেখানে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মানুষের আনাগোনা দেখতে পেয়েছেন তারা।
তাদের অনুমান রাতে সেখানে পূর্ববাংলা কমিউনিস্ট পার্টির নেতাদের গোপন বৈঠকের খবর পেয়ে যায় প্রতিপক্ষ। সেখানে গিয়ে হত্যাকান্ড ঘটানো হয়।
এর আগে ২০০৩ সালের ৫ ডিসেম্বর একই স্থানে পাঁচজনকে গুলি করে হত্যা করা হয়।
নিহত হানিফের বিরুদ্ধে কমপক্ষে ১৩টি হত্যাসহ বহু মামলা রয়েছে। হরিণাকুন্ডু উপজেলার কুলবাড়িয়া গ্রামের আব্দুর রহমান হত্যা মামলায় তার ফাঁসির আদেশ হয়। উচ্চ আদালতেও ফাঁসির রায় বহাল থাকলে হাসিনার সরকারের সময় রাষ্ট্রপতির বিশেষ ক্ষমা নিয়ে এলাকায় ফিরে আসেন হানিফ।
এদিকে এই হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে জাসদ গণবাহিনীর কালু পরিচয় দিয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে মেসেজ পাঠানো হয়। হোয়াটসঅ্যাপ বার্তায় দাবি করা হয়, ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা, মাগুরা, কুষ্টিয়া, যশোর ও খুলনাবাসীর উদ্দেশে জানানো যাচ্ছে যে, পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টি নামধারী কুখ্যাত ডাকাত বাহিনীর শীর্ষ নেতা অসংখ্য খুন, গুম, দখলদারি, ডাকাতি, ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত হরিনাকুণ্ডু নিবাসী হানিফ ও তার দুই সহযোগী জাসদ গণবাহিনীর সদস্যদের হাতে নিহত হয়েছেন। তাদের লাশ রামচন্দ্রপুর ও পিয়ারপুর খালের পাশে রাখা আছে।
শৈলকুপা থানার ওসি মাসুম খান জানান, নিহতরা আইনশৃঙ্খলা বিরোধী কাজের সাথে জড়িত ছিলেন এমন প্রমাণ রয়েছে। তবে কী কারণে এ ঘটনা ঘটেছে, তা তদন্তের আগে বলা যাচ্ছে না।
গণবাহিনীর পক্ষে হত্যার দায় স্বীকারের বিষয়ে তিনি বলেন, পুলিশ এ বিষয়টিও তদন্ত করে দেখছে।
ঝিনাইদহের পুলিশ সুপার মনজুর মোরশেদ জানান, ঘটনার তদন্ত চলছে।
Leave a Reply