September 11, 2025, 3:46 pm
একটি দৈনিক কুষ্টিয়া প্রতিবেদন/
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন ঘিরে এখনো চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। তবে এই নির্বাচনের ফলাফল শুধু ছাত্ররাজনীতির চিত্রই দেখায়নি, বরং বিএনপির জন্যও এটি হয়ে উঠেছে এক কঠিন বার্তা—আত্মজ্ঞান ও আত্মসমালোচনার সুযোগ। কারণ, সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন, আর তার আগে ছাত্রদলের ভরাডুবি বিএনপিকে নিজের রাজনৈতিক অবস্থান, কৌশল, শক্তি ও দুর্বলতা খোলাখুলিভাবে উপলব্ধি করার ডাক দিয়েছে।
ক্ষমতায় না গিয়েই ক্ষমতা উপভোগের যে উগ্র মানসিকতা দলটি দেখিয়েছে সেটাতে একটি চপেটাঘাত দিয়েছে এই ভোট। আমরা ধরেই নিলাম এই ভোট জাতীয় ভোটকে প্রভাবিত করতে নাও পারে। তবে গুণ বিচারের রাজনীতিতে এটা প্রভাবক। সাধারণ মানুষের ভাবনা এসব দিয়ে প্রভাবিত হবার নজীর আছে।
ছাত্রশিবির নির্বাচনী কৌশল, সাংগঠনিক দৃঢ়তা ও লক্ষ্যভিত্তিক প্রচারণার মাধ্যমে সফল হয়েছে। অন্যদিকে ছাত্রদল দীর্ঘদিনের আত্মতুষ্টি, “আমাদের ভোট আমাদের আছে” মানসিকতা, এবং অতিরিক্ত নির্ভরশীলতা—এসব কারণে শিক্ষার্থীদের আস্থা হারিয়েছে। বাস্তবতা হলো, ভোটাররা অতীতের বর্ণনা বা স্লোগান দিয়ে প্রভাবিত হয়নি; তারা যারা সংগঠিত ও কৌশলগতভাবে প্রস্তুত, তাদেরই পাশে দাঁড়িয়েছে।
এই নির্বাচন দেখিয়েছে, শুধু বড় দল হলেই বিজয় নিশ্চিত নয়। তরুণ প্রজন্মের কাছে চিল্লাচিল্লির রাজনীতি বা কৃত্রিম প্রগতিশীলতার আবরণ গ্রহণযোগ্য নয়। একই সঙ্গে অকার্যকর কৌশল, দুর্বল মাঠপর্যায়ের সংগঠন এবং ভোটারদের সঙ্গে বাস্তব সংযোগহীনতা—এসব বিএনপির জন্য বড় সতর্কবার্তা।
আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে বিএনপির সামনে প্রশ্ন স্পষ্ট: তারা কি সত্যিই নিজেদের পুনর্গঠন করবে, নাকি পুরোনো ভ্রান্ত ধারণা আঁকড়ে থাকবে? রাজনৈতিক ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়—জনগণের আস্থা ছাড়া কোনো দলই দীর্ঘস্থায়ী সাফল্য পায়নি।
ডাকসু নির্বাচনের বার্তা তাই একেবারে স্পষ্ট—সময় এসেছে আত্মসমালোচনা, পুনর্গঠন ও জনগণের হৃদয়ের ভাষা বোঝার।
তারপরও এখনও আওয়ামী লীগের অনুপস্থিতিতে বিএনপিই দেশের সবচে বড় দল। আওয়ামী লীগের পতনের পর দলটি বৃহত্তম দল হিসেবে জনগনের মধ্যে, ছাত্র সমাজের মধ্যে কেন নিরুংকুশ প্রভাব তৈরি করতে পারলো না সেটা চিন্তা করার ব্যাপর রয়েছে। সময় এখনও শেষ হয় যায়নি। চিন্তায় স্বচ্ছতা আনতে হবে, কাজে সেটা দেখাতে হবে। তৃণমূলে মানুষ এখনও বিএনপিকে প্রত্যাশার জায়গায় রেখেছে। সেটা যাতে মলিন হতে শুরু না করে সেদিকে লক্ষ্য রেখে নতুনভাবে সাজাতে হবে দলের কার্যক্রম।