June 2, 2025, 4:32 am

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক অনুমোদিত দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন পোর্টাল
সংবাদ শিরোনাম :
আইনে না থাকলেও অব্যাহত রয়েছে ‘পুশ-ইন’/২৩ দিনে ১১৪৪ জনকে বাংলাদেশে ঠেলে দিল ভারত শেখ হাসিনাকে প্রধান নির্দেশদাতা হিসেবে ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দাখিল, রয়েছে ৩২ জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকের নাম ১ যুগ পর নিবন্ধন ফিরে পেল জামায়াতে ইসলামী, আলহামদুলিল্লাহ লিখে ফেবু পোস্ট জামাত আমিরের তরুণদের ক্ষমতার মোহ থেকে সরে আসতে হবে : রিজওয়ানা এবারও দেশী পশুতেই মিটবে কোরবানির চাহিদা, উদ্বৃত্ত থাকবে ২০ লাখ ৬৮ হাজার পশু ‘প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যে মনে হচ্ছে আমরা মানুষ চিনতে ভুল করেছি’ শান্তি, গণতন্ত্র ও উন্নয়নে একসঙ্গে কাজ করবে বাংলাদেশ-জাপান জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাতবার্ষিকী আজ সুন্দরবনে মৌসুমি প্রবেশ নিষেধাজ্ঞা ১ জুন থেকে শুরু, সহায়তার আওতা বৃদ্ধির দাবি দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ

কুষ্টিয়া বিআরটিএ: আড়ালে কর্মকর্তারা, কাজ করেন দালালে

দৈনিক কুষ্টিয়া প্রতিবেদক/
বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি, কুষ্টিয়া সার্কেল অফিসে কর্মকর্তাদের দেখা পান না সেবা গ্রহীতারা। তারা থাকেন আড়ালে। তাদের সরকারি ওয়েবসাইটেও নাম্বার ভূল দেয়া আছে- যাতে যোগাযোগও করতে না পারেন। তবে, কাজ হয় বেশ দ্রুতগতিতেই। অতিরিক্ত টাকা দিলে দালালরাই করে দেয় সব। টাকা যতো বেশি দেবেন সেবা ততো দ্রুত পারেন। অফিসের সামনে তারা ভিড় করে থাকেন। বসে থাকেন ভেতরে চেয়ার টেবিলেও। শহরের বিভিন্ন জায়গায় এদের আলাদা অফিস এবং দোকান আছে। সেখানেও ঘোষণা দিয়েই করা হয় যানবাহন এবং চালকের লাইসেন্সসহ যাবতীয় কাজ।
বিআরটিএ অফিসে ঘুরছেন এমন কয়েকজনের সঙ্গে কথা হয় প্রতিবেদকের। সেবা পেতে বেকায়দায় পড়তে পারেন তাই তাদের অনুরোধে পরিচয় গোপন রাখা হলো। রফিক (ছদ্মনাম) বলেন, বাড়তি টাকা দিয়ে দালাল ধরলে চোখের পলকে কাজ হয়ে যায়। তাই কে চায় বারবার ঘুরতে। আবুল (ছদ্মনাম) বলেন, অনেক দিন ঘুরছি, তাও দশ মাস হবে। শুধু সামনের মাসে আসেন বলছে। সঠিক কাগজপত্র দিয়েও লাইসেন্স পাচ্ছি না। রাকিব (ছদ্মনাম) বলেন, সরকারি ফি জমা দিয়ে নিয়ম অনুযায়ী কাগজপত্রই জমা দিতে পারলাম না। যে টেবিলে যাই, সেই টাকা চায়। পরে জানলাম এরা অফিসের কেউ নয়, সবাই দালাল। অফিসের কর্মকর্তাকেই খুজে পাইনি। সালাম (ছদ্মনাম) বলেন, ব্যবহারিক, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা দিয়ে দুই বছর ঘুরছি, লাইসেন্স পাচ্ছি না। অথচ দেখলাম অনেকে অতিরিক্ত টাকা ঝট করে লাইসেন্স নিয়ে যাচ্ছে। আব্দুল (ছদ্মনাম) বলেন, কুষ্টিয়া বিআরটিএ কার্যালয়ে ঘুষ ছাড়া কাজই হয় না। কাগজ ঠিক আছে এবং চালনায় দক্ষ তবুও লাইসেন্স পাবেন না। বরং টাকা দিলে ওরাই (দালাল) কাগজপত্র ম্যানেজ করে দেবে। পরীক্ষায় পাসও করিয়ে দেবে।
নিয়মানুযায়ী ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে প্রথমে নির্দিষ্ট ফরমে আবেদন করতে হয়। পেশাদার লাইসেন্স-এর জন্য সরকার নির্ধারিত ফি হচ্ছে ১৬৮০ টাকা আর অপেশাদার লাইসেন্সের জন্য ২৫৪২ টাকা। একজন পেশাদার ও অপেশাদার চালককে তার ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে হলে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ)’র মোট ৫টি পরীায় অংশ নিতে হয়। এর আগে চালককে তিন মাসের জন্য একটি শিক্ষানবীশ লাইসেন্স (লার্নার) দেয়া হয়। যা দিয়ে তারা চালনার উপযুক্ত শিক্ষা লাভ করবেন। এরপর লিখিত, মৌখিক, জিগজ্যাগ, র‌্যাম ও রোড টেস্ট-এ উত্তীর্ণ হতে হয়। এসব পরীক্ষায় সাফল্যর সঙ্গে উত্তীর্ণ হওয়ার পরও অনেককিছু নীরিক্ষা করে দেয়া হয় মোটরযান চালানোর লাইসেন্স। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে একজন চালকের হাতে ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে সময় লাগে ৩ মাস। কিন্ত দালাল না ধরলে লাইসেন্স পেতে এক-দুই বছর পেরিয়ে যায়। এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে যদি কোন তদবির না থাকে তাহলে নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে আবেদনকারীরা পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়ে যান।
নানান অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত বছরের শুরুর দিকে কুষ্টিয়ার বিআরটিএ কার্যালয়ে দুদকের অভিযান চলে। অভিযানে দুই দালালকে আটক করে পরে তাঁদের ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে কারাদন্ড দেওয়া হয়। আর গত নভেম্বর ড্রাইভিং লাইসেন্সের পরীক্ষাকেন্দ্রে অভিযান চালিয়ে দুই জনকে কারাদ- দেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। এমন আরো কঠোর অভিযান চালানোর দাবি ভূক্তভোগী সেবা গ্রহীতাদের।

দালালরা অফিসের কর্মকর্তাদের এতোটাই আড়াল করে রেখেছেন যে তাদের সঙ্গে সেবা গ্রহীতারা মোবাইল ফোনেও যোগাযোগ করতে পারেন না। সরকারি ওয়েবসাইটে বিআরটিএ কুষ্টিয়া সার্কেলের সহকারি পরিচালক এটিএম জালাল উদ্দিনের যে মোবাইল নাম্বার দেয়া আছে তা অন্যজনের। আর মোটরযান পরিদর্শকের নাম, ছবি ও মোবাইল নাম্বার সবই ভুল। সেখানে দেয়া আছে মো. ওমর ফারুকের নাম ও মোবাইল নাম্বার। তিনি অনেক আগেই বদলি হয়ে গেছেন। তবে দৈনিক কুষ্টিয়ার প্রতিবেদক বর্তমান মোটরযান পরিদর্শক আব্দুল বারীর নাম্বার যোগাড় করেছেন। টেলিফোনে তিনি অবিযোগের বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি। বলেছেন, সকাল ৯টায় অফিসে আসেন যোগাযোগ হবে। দৈনিক কুষ্টিয়ার প্রতিবেদক সহকারি পরিচালক এটিএম জালাল উদ্দিনের নাম্বারও পেয়েছেন কিন্তু তিনি ফোন রিসিভ করেন নি। ক্ষুদে বার্তা পাঠানো হলেও তিনি সাড়া দেন নি।

 

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরোনো খবর এখানে,তারিখ অনুযায়ী

Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
2425262728  
© All rights reserved © 2024 dainikkushtia.net
Maintenance By DainikKushtia.net