June 1, 2025, 6:02 am
দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
সারাবিশে^ সাহিত্যের মর্যাদাপূর্ণ ইন্টারন্যাশনাল বুকার পুরস্কার ২০২৪ জিতে নিলেন ভারতীয় লেখিকা বানু মুশতাক। কন্নড় ভাষায় লেখা ‘হার্ট ল্যাম্প’ নামে ছোটগল্পের সংকলনটি জিতেছে বুকার। ফিকশন অনুবাদ বিভাগে বুকার-এর ইতিহাসে এই প্রথম কোনো ছোটগল্প সংকলন পুরস্কার পেল। বইটির অনুবাদ করা দীপা ভান্তিও জিতেছেন অনুবাদক হিসেবে এই পুরস্কার।
হার্ট ল্যাম্পের ১২টি গল্প বেছে নেয়া হয়েছে বানু মুশতাকের গত ৩০ বছরে লেখা ছয়টি সংকলন থেকে। প্রতিটি গল্পেই জীবন্ত হয়ে উঠেছে দক্ষিণ ভারতের পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নারীদের জীবনযাপন, লড়াই এবং অস্তিত্বের সূক্ষ্ম অথচ তীক্ষ্ণ বাস্তবতা।
লেখক বানু মুশতাক একইসঙ্গে একজন আইনজীবী ও অধিকারকর্মী। রোববারের সংক্ষিপ্ত তালিকাভুক্ত বইপাঠ আয়োজনে বানু মুশতাক বলেন, গল্পগুলো নারীদের ঘিরে—ধর্ম, সমাজ এবং রাজনীতি কীভাবে তাদের কাছ থেকে প্রশ্নহীন আনুগত্য দাবি করে এবং সেই প্রক্রিয়ায় কীভাবে অমানবিক নিষ্ঠুরতা চাপিয়ে দেয়, তাদের কেবল অধস্তন ভূমিকায় ঠেলে দেয়। সেই বেদনাদায়ক অভিজ্ঞতাগুলোর কথাই বলা হয়েছে।
চূড়ান্ত মনোনীত আরো পাঁচটি বইকে পেছনে ফেলে জয়ী হয়েছে বানু মুশতাকের হার্ট ল্যাম্প। ১৯৯০ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত সময়কালের গল্প নিয়ে তৈরি এ বই। গল্পগুলো বাছাই ও সম্পাদনা করেছেন দীপা ভাস্তি।
বুকারের বিচারকমণ্ডলীর প্রধান ও লেখক ম্যাক্স পোর্টার বইটিকে অভিহিত করেছেন ‘ইংরেজি ভাষার পাঠকদের জন্য এক বৈপ্লবিক অনুবাদ’ হিসেবে। তার ভাষায়— এটি দারুণভাবে সন্নিবেশিত প্রাণবন্ত গল্পের সমষ্টি, যা অনুবাদের নতুন এক দৃষ্টিভঙ্গি সামনে এনেছে। গল্পগুলোতে আছে সেই নারীবাদী চেতনা, যেজন্য বানু মুশতাক পরিচিত। আবার একই সঙ্গে রয়েছে পিতৃতন্ত্রের রূঢ় বাস্তবতা ও তার বিরুদ্ধে প্রতিরোধের বর্ণনা। কিন্তু এগুলো কোনো রাজনৈতিক স্লোগান নয়, বরং সাধারণ জীবন বিশেষ করে নারীদের জীবনের নান্দনিক বয়ান।’
দীপা ভাস্তি তার অনুবাদ সম্পর্কে বলেন, ‘আমি এটিকে বলি অ্যাকসেন্টসহ অনুবাদ। এর মানে, পাঠক বুঝবেন যে তারা অন্য এক সংস্কৃতির গল্প পড়ছেন, কিন্তু সেটাকে কখনোই বিদেশী বা বিচিত্র করে তোলার চেষ্টা করা হয়নি। হার্ট ল্যাম্পের ইংরেজি হলো এমন এক ইংরেজি, যার মধ্যে কন্নড়ের মৃদু কম্পন অনুভব করা যায়।’
পুরস্কারের অর্থমূল্য ৫০,০০০ পাউন্ড, যা লেখক ও অনুবাদকের মধ্যে সমান ভাগে ভাগ হবে। মঙ্গলবার (২০ মে) রাতে লন্ডনের টেট মডার্নে আয়োজিত অনুষ্ঠানে পুরস্কারটি তুলে দেয়া হয়। সেখানেই অভিনেত্রী অম্বিকা মড বইটির একটি অংশ আবৃত্তি করে শোনান।
Leave a Reply