March 14, 2025, 12:19 pm

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক অনুমোদিত দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন পোর্টাল
সংবাদ শিরোনাম :

প্রাথমিক থেকে কলেজ খুলছে মার্চে, বিশ্ববিদ্যালয় মে মাসে, রোজার ছুটি কমে যাবে

দৈনিক কুষ্টিয়া ডেস্ক/

আগামী ৩০ মার্চ থেকে এক  বছর বন্ধ থাকা দেশের সব প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী স্কুল-কলেজ খুললে পঞ্চম, দশম ও দ্বাদশ শ্রেণিতে সাপ্তাহিক ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন ক্লাস নেয়া হবে। বাকিদের সপ্তাহে একদিন ক্লাসে আসতে হবে। তবে বিশ^বিদ্যালয় মে মাসেই খুলছে। এবার রোজার ছুটি অনেক কমিয়ে দেয়া হতে পারে। রোজার মধ্যেই ক্লাস পরীক্ষা নেয়া হতে পারে।

শনিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক শেষে রাত সাড়ে ৮টার দিকে এসব তথ্য জানান শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। এর আগে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে শিক্ষামন্ত্রীর সভাপতিত্বে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক চলে টানা দুই ঘণ্টা।

শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, ‘এই সময়ের মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা থেকে শুরু করে অন্যান্য যে প্রস্তুতি সেগুলো আমাদের নেয়া হয়েছে। আশা করছি- শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার আগে শিক্ষক ও কর্মচারীদের করোনা টিকা দেয়ার বিষয়টিও সমাপ্ত করতে পারব।’

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘কোথাও কোথাও যদি মেরামত ও সংস্কারের দরকার হয়। আপনারা জানেন- বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ক্ষেত্রে আমরা বলেছি- ১৭ মে হলগুলো খুলে দেয়া হবে, এর আগেই সংস্কার-মেরামত কাজ করা হবে। আর প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের ক্ষেত্রে যে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতর, পিডব্লিউডি- এদের সকলের মাধ্যমে মেরামতের কাজগুলো সম্পন্ন করব।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় একেবারে তৃণমূল পর্যায়ে সব জায়গায় স্বাস্থ্যবিধিগুলো সঠিকভাবে মানা হচ্ছে কিনা, যে নোটিশগুলো থাকা দরকার সেগুলো প্রদর্শিত হচ্ছে কিনা- সেগুলো তারা দেখবেন। আর আমাদের প্রাথমিক ও গণশিক্ষা এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যারা মাঠ পর্যায়ে আছেন তারাও এই বিষয়গুলো মনিটর করবেন।’

শিক্ষামন্ত্রীর সভাপতিত্বে বৈঠকে কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক, তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন অংশ নেন। এছাড়া মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম, জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তাফা কামাল উদ্দীন, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. আব্দুল মান্নান, কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) মো. কামাল হোসেন, পুলিশ মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলমসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বৈঠকে অংশ নেন।

দীপু মনি আরও বলেন, ‘আমরা প্রাক-প্রাথমিককে এখন আনব না। সেটি আমরা অবস্থা বিবেচনা করে পরে কখন আনব, সেটি পরে সিদ্ধান্ত নেব।’
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘২০২১ সালে যারা এসএসসি দেবেন তাদের জন্য ৬০ কর্মবিসের সিলেবাস ও এইচএসসির জন্য ৮০ কর্মদিবসের সিলেবাস প্রণয়ন করেছি। তাই তাদের সেই ৬০ ও ৮০ কর্মদিবস ক্লাস করানোর জন্য চেষ্টা করব তাদের ক্লাসে ছয় দিন আনতে।’
‘স্কুল-কলেজ খোলার ২ মাসের মধ্যে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা নেয়ার পরিকল্পনা আছে- তখন বলেছিলাম যদি এখন খোলা সম্ভব হয়…যখনই খুলি আমাদের ৬০ কর্মদিবস। আমরা মার্চের শেষে খুললে এর পর থেকে ৬০ কর্মদিবস তাদের ক্লাস করিয়ে, পরীক্ষার আগে আরও সপ্তাহ দুয়েক সময় আরও দিয়ে তাদের পরীক্ষাটা নেব।’
তিনি বলেন, ‘মার্চের শেষে খুললে এরপর ৬০ কর্মদিবস এরপর ঈদের ছুটি আছে। অন্যান্য ছুটি আছে, সাপ্তাহিক ছুটি আছে। সবকিছু মিলিয়ে হয়ত পরীক্ষাটা জুলাই মাসে চলে যেতে পারে। হিসেবটা সেভাবে হবে।’

তবে কী এবার পুরো রোজায় ছুটি থাকবে না, এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘রোজার ছুটি পুরো রোজায় থাকবে না। কারণ একটা বছর তো বন্ধই ছিল। আমরা ছোট বেলায় দেখেছি, রোজার সময় কিন্তু আমরা ক্লাস করতাম, শুধু ঈদের সময় আমাদের একটা ছুটি থাকত। এবারও আমরা সেরকমই করব। ছেলেমেয়েরাও এক বছর বাড়িয়ে থাকতে থাকতে একটু হাঁপিয়ে উঠেছে। আমার মনে হয় না রোজার সময় ওদের স্কুলে আসতে আপত্তি থাকবে। শুধু ঈদের সময় কয়েক দিন ছুটি থাকবে।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ যেভাবে টিকার বিষয়ে সারা দিচ্ছে। টিকার সংখ্যা যত বাড়বে থাকবে আমরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো তত দ্রুত স্বাভাবিক অবস্থায় নিয়ে যাব।’

শিক্ষকদের দ্রুত টিকা আওতায় আনার জন্য প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন। এই সময়ের মধ্যে শিক্ষকদের সবাইকে কী টিকার আওতায় আনা যাবে কিনা- এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আশা করছি। ইতোমধ্যে প্রাথমিকের দেড় লাখ শিক্ষক টিকা নিয়ে নিয়েছেন। স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সঙ্গে শিক্ষা বিভাগ যৌথভাবে সহযোগিতার মাধ্যমে শিক্ষকদের দ্রুত রেজিস্ট্রেশন ও টিকা নেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করার চেষ্টা করব।’

এ বিষয়ে সহযোগিতা দিতে জন প্রতিনিধিদের সহযোগিতাও চেয়ে চিঠি লেখা হচ্ছে বলেও জানান শিক্ষামন্ত্রী।

আগামী ২৪ মে বিশ্ববিদ্যালয় খুলছে, শিক্ষার্থীদের টিকা নিয়ে হলে উঠতে হবে। এ বিষয়টি নিশ্চিত করা যাকে কিনা। কিংবা কত শিক্ষার্থীর টিকা লাগবে সেই ডাটাবেজ আছে কিনা- এ বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে আমাদের ২২০টি আবাসিক হল আছে, এর আবাসিক ছাত্র সংখ্যা প্রায় এক লাখ ৩০ হাজার। এই আবাসিক শিক্ষার্থীদের টিকা দিতে ইতোমধ্যে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। আমরা সব বিশ্ববিদ্যালয়ে ইউজিসির মাধ্যমে টিকা পাঠিয়েছি গত বুধবার। তারা যাকে সকল আবাসিক শিক্ষার্থীর নাম, ঠিকানা, জাতীয় পরিচয়পত্র নাম্বারসহ আমাদের কাছে টিকার জন্য তালিকা পাঠাবেন। সেটা আমরা স্বাস্থ্য সেবা বিভাগে পাঠিয়ে দেব।’

‘আবসিক শিক্ষার্থীরা দেশের যেখানেই থাকবেন। সেখান থেকেই রেজিস্ট্রেশন করতে পারবে এবং নিকটস্থ টিকাদান কেন্দ্র থেকে তারা টিকা নিতে পারবেন। আমরা আশা করছি ১৭ মে-র আগেই আবাসিক শিক্ষার্থীদের টিকা দিতে পারব ইনশাআল্লাহ।’

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরোনো খবর এখানে,তারিখ অনুযায়ী

Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
2425262728  
© All rights reserved © 2024 dainikkushtia.net
Maintenance By DainikKushtia.net