November 21, 2024, 8:04 pm
দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) প্রথম বর্ষের ছাত্রী ফুলপরী খাতুনের ওপর নির্যাতন চলাকালে ভিডিও ধারণ করা মোবাইল ফোন এখনও উদ্ধার হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বরেছে মোবাইল উদ্ধারে উদ্যোগ নিতে পুলিশকে চিঠি দেয়া হয়েছে। পুলিশ বলছেন চিঠি পাওয়া গেছে, উদ্ধারে তৎপরতা শুরু করেছে প্রশাসন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচএম আলী হাসান জানিয়েছেন হাইকোর্টের নির্দেশনার পূর্ণাঙ্গ কপি পাওয়ার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ৯ মার্চ এ বিষয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় ও হাইকোর্টের নিদের্শনার পূণার্ঙ্গ নথি হাতে পেতে যতটুকু সময় লেগেছে তার আলোকেই পত্র দেয়া হয়েছে। অফিসিয়ালী আরও কিছু তথ্য আগামী শনিবার দেয়া হবে বলে তিনি জানান।
এদিকে, বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আন নূর যায়েদ।
তিনি জানান বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে পাঠানো রেজিস্ট্রারের চিঠি পেয়েছেন। উদ্ধার তৎপরতা শুরু হয়েছে বলেও তিনি জানান।
নির্যাতনের শিকার ফুলপরী খাতুনের অভিযোগ ছিল গত ১১ ও ১২ ফেব্রুয়ারি যখন তার উপর নির্যাতন চলে তখন হালিমা খাতুন উর্মি নামের এক ছাত্রী তার ভিডিও ফোনে ধারণ করেন। ফুলপরীর আরও দাবি ছিল অত্যাচার চলাকালে তার সাথে বিভিন্ন ধরনের ‘অশ্লীলতাও’ করা হয়। সেসব ভিডিও দারন করে তার জীবন শেষ করে দেয়ার হুমকি দেয়া হয়েছিল।
কিন্তু তদন্ত কমিটির কাছে অভিযুক্ত ঐ ছাত্রী দাবি করেন, তার মোবাইল ফোনটি হারিয়ে গেছে। তিনিটি তদন্ত কমিটিই একই ধরনের তথ্য পায়। তদন্ত কমিটির তথ্যের আলোকে ফোনটি উদ্ধারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে নির্দেশনা দেন হাইকোর্ট।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরতœ শেখ হাসিনা হলে গত ১১ ও ১২ ফেব্রুয়ারি দুই দফায় ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের অনাবাসিক ছাত্রী ফুলপরী খাতুনকে নির্যাতন করার অভিযোগ ওঠে ইবি শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরা, ফিন্যান্স বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের তাবাসসুমসহ আরও তিন জনের বিরুদ্ধে। তাকে হত্যার হুমকি দিলে মেয়েটি হল ত্যাগ করে।
১৫ ফেব্রুয়ারি বিষয়টি হাইকোর্টের নজরে আনেন আইনজীবী গাজী মো. মহসীন ও আজগর হোসেন তুহিন। তখন তাদের লিখিত আবেদন দিতে বলেন আদালত। সে অনুসারে তারা জনস্বার্থে রিট করেন। ১৬ ফেব্রুয়ারি রিটের শুনানি শেষে একজন জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ও একজন প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তার সমন্বয়ে তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। এছাড়া অভিযুক্তদের ক্যাম্পাসের বাইরে রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়। এরই মধ্যে গত ১৮, ২০ ও ২২ ফেব্রুয়ারি বিভিন্ন কমিটির ডাকে মোট তিনবার পৃথকভাবে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ক্যাম্পাসে এসে সাক্ষাৎকার দেন ভুক্তভোগী ও অভিযুক্তরা।
ঘটনা তদন্তে হল প্রশাসন ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে দুটি পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এছাড়া ১৫ ফেব্রুয়ারি আরেকটি তদন্ত কমিটি গঠন করে শাখা ছাত্রলীগ।
৪ মার্চ হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী নির্যাতনের অভিযোগে ছাত্রলীগ সহ-সভাপতিসহ পাঁচ ছাত্রীকে সাময়িক বহিষ্কার করে প্রশাসন।
Leave a Reply