March 24, 2025, 5:30 am
দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
পাবনার চাটমোহর উপজেলার জার্জিস মোড় থেকে মান্নানগরের আঞ্চলিক মহাসড়কের সংস্কার কাজ ফেলে পালিয়ে গেছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। ফলে বন্ধ রয়েছে সংস্কার কাজ। এতে দুর্ভোগের শেষ নেই সাধারণ মানুষের।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মকর্তারা ঘটনার সত্যতা স্বীকার কওে জানিয়েছেন ৫ আগস্টরের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে লাপাত্তা হয়েছেন ঠিকাদার। তাকে কোনভাবেই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
সড়ক বিভাগ জানায়, এটা একটি স্বল্প মেয়াদী সংস্কার কাজ ছিল। ২০২৪ সালের জানায়ারি মাসে দরপত্র দেয়া হয়। একই বছরের ১১ জুন তূর্ণা এন্টারপ্রাইজ প্রাইভেট লিমিটেড নামের সিরাজগঞ্জের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ প্রদান করা হয়।
মোট ১৮ কিলোমিটারের এই সড়ক সংস্কারের ব্যয় ধরা হয় ১৬ কোটি ৪২ লাখ ৬১ হাজার টাকা। কাজ সমাপ্ত করার শেষ সময় আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি। সেই সময় শেষ হয়ে গেছে।
কার্যাদেশ পাওয়ার পর ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করেছিল। ১৮ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে ১২ কিলোমিটারের পুরোনো কার্পেট উঠিয়ে নতুন করে পাথর ফেলা হয়েছিল। ১০ জুলাই থেকে কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এরপর ৫ আগস্ট দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিেিত ঠিকাদার আর কাজে ফেরেনি।
এদিকে, কাজ বন্ধ থাকায় উপজেলার হাটিয়াল-হামকুড়িয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের ১২ কিলোমিটারে দুর্ভোগের শেষ নেই। প্রতিনিয়ত ঝুঁকি নিয়ে এ পথ দিয়ে কয়েক লাখ মানুষ চলাচল করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পাবনা সদর, আটঘরিয়া, চাটমোহর, ভাঙ্গুড়াসহ কয়েকটি উপজেলার সঙ্গে ঢাকায় যোগাযোগের বিকল্প পথ হিসেবে হাণ্ডিয়াল-হামকুড়িয়া আঞ্চলিক মহাসড়কটি ব্যবহৃত হয়। এ পথ ব্যবহার করে এসব উপজেলায় বাসিন্দাদের ঢাকায় যেতে প্রায় দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা সময় সাশ্রয় হয়।
এ ছাড়া চলনবিল থেকে মাছ ও কৃষিপণ্য পরিবহনেও যথেষ্ট ভূমিকা রাখছে এই আঞ্চলিক মহাসড়কটি। চাটমোহর থেকে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক পর্যন্ত ১৮ কিলোমিটার দূরত্ব। বর্তমানে সংস্কার বন্ধ থাকায় সড়কজুড়ে খানাখন্দ ও অসংখ্য ছোট বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এতে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, জার্দিস মোড় থেকে শুরু করে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার সড়কের পুরোনো কার্পেটিং তুলে ফেলা হয়েছে। সড়কের দুই পাশে বেইজ ওয়াল নির্মাণ করে রাস্তায় ফেলা হয়েছে বালু ও পাথর। এরপর থেকে বন্ধ রয়েছে কাজ। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে চলাচলকারীরা।
শুষ্ক মৌসুম হওয়ায় ধুলাবালির কারণে রাস্তায় চলাচল করা দুরূহ হয়ে উঠছে। পাশাপাশি সড়কের পাশের বাসিন্দাদের বসবাস করা কষ্টসাধ্য হয়ে উঠছে।
এ রাস্তায় চলাচল করেন আটঘরিয়ার বাতেন আলী। বাতেন জানান,চরম দুর্বিষহ সময় অতিবাহিত করতে হচ্ছে। মাঝে মধ্যে রাস্তায় পানি ছিটিয়ে ধুলা কমানো চেষ্টা করেও লাভ হচ্ছে না।
এ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘টুর্ণা এন্টারপ্রাইজের’ কারো সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। এমনকি সড়ক বিভাগের কাছে ঠিকাদারের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য মোবাইল নম্বর চেয়েও পাওয়া যায়নি।
পাবনা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল মনসুর আহমেদ বলেন, ‘এখানে ঠিকাদারের গাফিলতি আছে। আমরা ইতোমধ্যেই একাধিকবার তাকে সতর্ক করেছি এবং নোটিশ দিয়েছি। ইতোমধ্যেই তার চুক্তি বাতিল করার জন্য কর্তৃপক্ষ বরাবর চিঠি দিয়েছি। এখন দেখা যাক তার বিরুদ্ধে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ কি ব্যবস্থা নেয়।’
Leave a Reply