December 6, 2024, 11:12 pm

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক অনুমোদিত দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন পোর্টাল
সংবাদ শিরোনাম :
বেস্ট ভলান্টিয়ার পদক অর্জন কুষ্টিয়ার সাদিক হাসান রহিদের চিরপ্রস্থানে আমাদের আবু জাফর স্যার কুষ্টিয়া-৪’র সাবেক এমপি জর্জকে নতুন মামলায় কারাগারে প্রেরণ মাসের ব্যবধানে ফের খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি বেড়ে ১৩ দশমিক ৮০ শতাংশ বছরজুড়ে ১২টি শৈত্যপ্রবাহ, থাকবে শিলাবৃষ্টি, ঝড় সুখবর আসছে: জামায়াত আমির ফরিদপুর ও রাজবাড়ী/সরকারের বিনামূল্যের পেঁয়াজ বীজে চারা গজায়নি ৯৫ ভাগ জমিতে যারা আটক আছে তাদের পক্ষে উপযুক্ত প্রতিনিধিত্ব করতে দিতে হবে : যুক্তরাষ্ট ১১৬ দিন শুণ্য থাকার পর ইবিতে নতুন প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর ও ট্রেজারার কেন উত্তাল বাংলাদেশ? কেন এত বিতর্ক চিন্ময়কৃষ্ণের গ্রেফতারি নিয়ে ?

ধানের ফলন বাম্পার, চালের উৎপাদন, মজুদেও রের্কড, তারপরও দুই বছরে চালের দাম বেড়েছে ৪৭%

দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
সবশেষ আমন মৌসুম ছিল ধানের বাম্পার ফলনের। একই সময়ে চাল উৎপাদনেও ছিল রেকর্ড। সরকারের নিজ হিসেব মতে সরকারের গুদামে বর্তমানে ১৭ লাখ টনের বেশি চাল মজুদ রয়েছে, যা অন্য যে কোনো সময়ের তুলনায় সরকারের চালের মজুদের রেকর্ড। কিন্তু এর পরও বাজারে চালের দাম সহনীয় পর্যায়ে নেই, আসছেও না। সরুচালের বাজারে অস্থিরতা অব্যাহত যেমন ছিল, মোটা চালও দাম বেড়ে এখন অনেক মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে অবস্থান নিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক কৃষি বিভাগ ইউএসডিএ প্রকাশিত গ্রেইন অ্যান্ড ফিড আপডেট শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে খুচরা বাজারে সাধারণ মানের (মোটা চাল) প্রতি কেজি চালের গড় দাম ছিল ৩২ টাকার কিছু বেশি। সেই চালের দাম এ বছর হয়েছে ৪৭ টাকা ৫০ পয়সা। অর্থাত্ দুই বছরের ব্যবধানে মোটা চালের দাম বেড়েছে প্রায় ৪৭ শতাংশ। অথচ ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে সাধারণ মানের চালের প্রতি কেজিতে গড় দাম ছিল ৩৬ টাকা। সেটি বেড়ে ২০১৮ সালে ৪৭ টাকার বেশি ছাড়িয়ে যায়। কয়েক দফা ওঠানামার পর ২০২০ সালের জানুয়ারিতে সর্বনিম্ন পর্যায়ে আসে। এরপর আবারো বাড়তে থাকে চালের দাম। সেই বছর নভেম্বরেই ভোক্তা পর্যায়ে প্রতি কেজি চালের গড় দাম ৪৮ টাকা ছাড়িয়ে যায়। গত বছরের মে ও সেপ্টেম্বরে সাধারণ মানের চালের দাম ৪৯ টাকায় উন্নীত হয়, যা জানুয়ারিতে ৪৭ টাকা ৫০ পয়সায় নেমে আসে।
অন্যদিকে, ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য অনুযায়ী, প্রতি কেজি মোটা চালের দাম ছিল ৪৪-৪৮ টাকা। অন্যদিকে ভালো মানের চাল বিক্রি হয়েছে ৬০-৬৮ টাকায়।
এ অবস্থা কেন অব্যাহত থাকছে। কেন সরকারের শুল্ক সুবিধার মাধ্যমে চাল আমদানি করা, সরকারের মজুদ বেশি থাকা সত্ত্বেও চালের দাম খুব বেশি না কমার পেছনে মিলার ও ব্যবসায়ীদের একচ্ছত্র প্রভাবকেই দায়ী করছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন সরকারের দুর্বল মজুদ ব্যবস্থাপনা ও খাদ্য বিতরণ ব্যবস্থায় অপর্যাপ্ততার কারণে বাজারের নিয়ন্ত্রকসংশ্লিষ্টরা সুযোগ নিচ্ছে। তারা বলছেন, বাজারে চালের সরবরাহে সংকট তৈরি না হলেও দাম অস্থিতিশীল। মূলত বিভিন্ন মধ্যস্বত্বভোগীদের অনিয়ন্ত্রিত উত্থান, কার্যকর ও দক্ষ সরবরাহ চেইন না থাকা, চালের মজুদ ধারাবাহিকভাবে উচ্চপর্যায়ে না রাখা ও মনিটরিংয়ের অভাবে চালের বাজারে দাম অসহনীয় পর্যায়ে চলে যাচ্ছে।
অভিযোগ তোলা হচ্ছে ধান উৎপাদনের সাথে কোনরকম সংশ্লিষ্টতা না থাকলেও চালের বাজার নিয়ন্ত্রণ দেশের দেশের বড় ৫০টি অটো রাইস মিলের হাতেই থাকে বেশির ভাগ ধান-চালের মজুদ। তারা প্রচলিত আইন না ভেঙেই চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে বড় প্রভাবক হিসেবে কাজ করছে।
সরকারের হিসেব থেকে দেখা গেছে, চালের বাজার স্থিতিশীল রাখতে গত বছরের ১২ আগস্ট চাল আমদানির শুল্ক কমিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। চালের আমদানি শুল্ক ৬২ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৫ শতাংশ করা হয়। এ সুবিধা একটি নির্দিষ্ট মেয়াদ পর্যন্ত দেয়া হয়েছিল। যদিও চাল আমদানিতে উচ্চ শুল্ক বিরাজ করা হয়েছিল দেশীয় কৃষকদের সুবিধার জন্য। তবে চালের দাম অনেক বেড়ে যাওয়ার কারণে ২০২০ সালের ২৪ ডিসেম্ব্বর বেসরকারিভাবে চালের আমদানি শুল্ক কমানোর অনুমতি দেয়া হয়। নির্দিষ্ট সময়ের জন্য শুল্কহার ৬২ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৫ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়। এরপর দেশে চালের আমদানি বেড়েছে ব্যাপক হারে। ২০২০-২১ অর্থবছরে চালের আমদানি হয়েছে প্রায় ১৩ লাখ ৫৯ হাজার টন। এছাড়া চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের ২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চালের আমদানি হয়েছে ৯ লাখ ২৪ হাজার টন।
অভিযোগের সকল তীরই চলে যাচ্ছে মিলারদের দিকে। মধ্যস্বত্বভোগী এই শ্রেণী মুনাফা লুটতে প্রথমে কৃষকদের কাছ থেকে ধান কিনে নিয়ে থাকে। তারপর ইচ্ছে মতো উৎপাদন প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রন করে চালের দাম বৃদ্ধি করে। কারন সাম্প্রতিক সময়ে সরকারের মজুদ বেড়েছে। সরবরাহ বাড়াতে শুল্ক কমানো হয়েছে। এসব নানা উদ্যোগ নিয়েও বাজারে মূল্য নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। এতে মনে হচ্ছে চালের দাম নির্ধারণ ও বিপণন প্রক্রিয়ায় মধ্যস্বত্বভোগী বিশেষ করে মিলাররা ভীষণ শক্তিশালী ও পারদর্শী। কেননা বাজার তৈরি ও নিয়ন্ত্রণে কৃষকের কোনো ধরনের সাংগঠনিক সক্ষমতা নেই। সরকারের কর্তৃপক্ষ হিসেবে খাদ্য অধিদপ্তরের কাছে নেই পর্যাপ্ত দক্ষতা ও হাতিয়ার।

উত্তরোণের প্রক্রিয়া/
বিশেষজ্ঞরা বলছেন বাজার থেকে ধান না কেনার কারণে ধানের বাজারের একচ্ছত্র আধিপত্য মিলারদের কাছেই তুলে দেয়া হয়। ধানের এত বড় বাজার এককভাবে ব্যবসায়ী ও মিলারদের কাছে রাখা মোটেও যৌক্তিক নয়। অন্যদিকে ফলে মজুদ আইন সংশোধনের উদ্যোগ নিতে হবে। স্বাভাবিক আইনে অটো রাইস মিলগুলো চলার মতো ধান দেশে আছে কিনা সেটি ভাবতে হবে। ফলে কয়টা অটো রাইস মিলকে অনুমোদন দেয়া হবে এবং এসব মিলের উত্পাদন সক্ষমতা কতটুকু হবে, সে বিষয়ে সীমা নির্ধারণ করা প্রয়োজন। তা না হলে কোনো ধরনের আইনের ব্যত্যয় না ঘটিয়েই চালের সব নিয়ন্ত্রণ এদের হাতে চলে যাবে। সরকারের মজুদ সক্ষমতা বাড়ানো, কৃষকের কাছ থেকে সরাসরি ধান কেনার প্রচলন করতে হবে। পাশাপাশি চিকন ও মোটা দানার চালের জন্য সরকারের আলাদা ন্যূনতম সহায়তা মূল্য (এমএসপি) ঘোষণা করা প্রয়োজন। খাদ্য অধিদপ্তর যেন মোট উত্পাদনের প্রায় ১০ শতাংশ সংগ্রহ করার সক্ষমতা অর্জন করতে পারে সেটি খেয়াল রাখতে হবে। আবার মিলাররা তাদের মুনাফা দেখানোর ক্ষেত্রে অনেক সময় উপজাত দ্রব্য ভালো দামে বিক্রি করলেও সেটির হিসাব না দেখিয়ে বলে থাকেন তাদের মুনাফা হচ্ছে না। এর মাধ্যমে তারা সরকারের কাছ থেকে বাড়তি সুবিধা আদায়ের চেষ্টা করেন।

 

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরোনো খবর এখানে,তারিখ অনুযায়ী

MonTueWedThuFriSatSun
      1
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031     
      1
30      
1234567
891011121314
15161718192021
293031    
       
     12
24252627282930
       
2930     
       
    123
       
   1234
26272829   
       
293031    
       
    123
25262728293031
       
  12345
27282930   
       
      1
9101112131415
3031     
    123
45678910
11121314151617
252627282930 
       
 123456
78910111213
28293031   
       
     12
3456789
24252627282930
31      
   1234
567891011
19202122232425
2627282930  
       
293031    
       
  12345
6789101112
       
  12345
2728     
       
      1
3031     
   1234
19202122232425
       
293031    
       
    123
45678910
       
  12345
27282930   
       
14151617181920
28      
       
       
       
    123
       
     12
31      
      1
2345678
16171819202122
23242526272829
3031     
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
242526272829 
       
© All rights reserved © 2024 dainikkushtia.net
Maintenance By DainikKushtia.net