February 11, 2025, 4:34 am
দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে নতুন শর্ত আরোপ করা হয়েছে। বেনাপোল কাস্টমস হাউস থেকে ১১টি শর্ত দিয়ে এ-সংক্রান্ত আদেশ জারি করা হয়েছে।
বেনাপোল স্থলবন্দর দেশের বৃহত্তম একটি আন্তর্জাতিক বন্দর। এ বন্দর দিয়ে ভারত থেকে ৮০ ভাগ পণ্য আমদানি হয়। পাশাপাশি দেশটিতে পণ্য রফতানিও হয়। তবে ভারত হয়ে তৃতীয় দেশে পণ্য পাঠাতেও অনেকে এ বন্দর ব্যবহার করে থাকেন।
কাস্টমস কমিশনার মো. কামরুজ্জামান স্বাক্ষরিত নিদের্শনানুযায়ী, এখন ৪০,০০০ ডলারের বেশি মূল্যের বা ২০,০০০ টুকরার বেশি প্রস্তুত তৈরি পোশাকের রপ্তানির ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক শারীরিক পরিদর্শন করা হবে। এর অর্থ হলো, কর্তৃপক্ষ প্যাকেট খুলে দেখে নিশ্চিত করবে যে ঘোষণার সাথে পণ্যের সামঞ্জস্য রয়েছে কিনা।
সোমবার এ কাস্টমস হাউস এই আদেশ জারি করেছে।
বন্দর কর্তৃপক্ষ মনে করছে এই নিদের্শনা আমদানি-রফতানি বাণিজ্যে অধিকতর গতি সঞ্চার করবে, সময় হ্রাস করবে এবং বাণিজ্য সহজীকরণসহ করদাতাবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করবে।
আদেশে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ ১২ ধরনের আমদানি পণ্যকে “সংবেদনশীল” এবং “কাস্টমস-ঝুঁকিপূর্ণ” হিসেবে উল্লেখ করেছে, যা কর ফাঁকির উচ্চ ঝুঁকির সাথে জড়িত বলে মনে করা হয়।
পণ্যগুলো হলো অ্যাসর্টেড গুডস, সব ধরনের কাপড়, সব ধরনের নতুন ও পুরনো মোটরপার্টস (টু হুইলার, থ্রি হুইলার, ফোর হুইলার ইত্যাদি) বাইসাইকেল যন্ত্রাংশ, ইলেকট্রনিকস ও ইলেকট্রিক্যাল পণ্য, প্রসাধনসামগ্রী, ইমিটেশন জুয়েলারি, বাণিজ্যিক ভিত্তিতে রেয়াতি সুবিধায় আমদানীকৃত যন্ত্রপাতি ও যন্ত্রাংশ, শিল্প খাতের যন্ত্রাংশ, চিকিৎসা যন্ত্রপাতি ও অস্ত্রোপচারসামগ্রী এবং একই চালানে পাঁচমিশালি পণ্য।
এছাড়া অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেম পর্যালোচনা করে ঝুঁকিপূর্ণ প্রতিষ্ঠান, এইচএস কোডসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়মিত পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে পণ্যের চালানের কায়িক যাচাই-বাছাই করা, গোপন সংবাদ সংগ্রহ, বন্দরের অভ্যন্তরে ও বাইরে ঘোষণাতিরিক্ত বা ঘোষণাবহির্ভূত পণ্য চালান চিহ্নিতকরণ ও ফাঁকি উদঘাটন, রাজস্ব আহরণ ও খালাস প্রক্রিয়া সার্বক্ষণিক নজরদারি এবং চোরাচালান প্রতিরোধে আইনানুগ কার্যক্রম নেয়ার জন্য আইআরএম কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছে বেনাপোল কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।
শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরসহ অন্যান্য সংস্থা থেকে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে প্রযোজ্য ক্ষেত্রে আইজিএম, বিল অব এন্ট্রি লকসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি শুল্ককর ফাঁকি রোধে বেশকিছু নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে।
বেনাপোল কাস্টমসের ইনভেস্টিগেশন রিসার্চ অ্যান্ড মানেজমেন্টকে (আইআরএম) বেশির ভাগ দায়িত্ব পালন করবে। এই নির্দেশনা পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বহাল থাকবে।
এদিকে, এই নিদের্শনায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে আমদানি-রফতানিকারকদের মধ্যে। অনেকেই মনে করছেন এতে ভোগান্তি নতুন করে বাড়বে। আমদানি-রফতানি বাণিজ্যে অধিকতর গতি সঞ্চারের পরিবর্তে হয়রানির মাত্রা আরো বাড়বে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।
বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্টস এসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি আলহাজ্ব মহসিন মিলন এ উদ্যোগকে স্বাগত জানান। তিনি মনে করেন, সরকারের রাজস্ব বৃদ্ধিতে এবং আমদানিতে স্বচ্ছতা আনতে নতুন চালু হওয়া পদ্ধতিগুলো অর্থবহ হবে।
যশোর চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাসট্রিজের সভাপতি মিজানুর রহমান খান বলেন, বন্দর কর্তৃপক্ষ যেসকল পদ্ধতি চালুর কথা বলছেন তারা বলছেন সবই আন্তর্জাতিক মানের। যশ্রো চেম্বার এসব নিয়ে লিখিত বক্তব্য জানাবে বলে তিনি জানান।
Leave a Reply